ঢাকা,বুধবার, ৮ মে ২০২৪

পেকুয়ায় কৃষিভিত্তিক সমন্বিত মৎস্য চাষের বৈপ্লবিক সুচনা ‘রমিজ আহমদ মৎস্য ফার্ম’ অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত

sssমুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া :::
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার এই প্রথম বারের মতো কৃষিভিত্তিক বিজ্ঞান ও গবেষণা পদ্ধতি অনুসরণ করে সমন্বিত মৎস্য চাষের বৈপ্লবিক সুচনা করেছে ‘রমিজ আহমদ মৎস্য ফার্ম। পেকুয়া সদর ইউনিয়নের হরিণাফাঁড়ি (নতুন রাহাতজানি পাড়া) গ্রামে প্রায় ১০ কানি জমিতে ৩টি পুকুর খনন করে লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ গত এক বছর পূর্বে থেকে সমন্বিত এ মৎস্য খামারটি প্রতিষ্টা করেছেন সদর ইউনিয়নের আন্নর আলী মাতবর পাড়া গ্রামের সমাজসেবক রমিজ আহমদের পুত্র মো: আজমগীর। আত্মপ্রত্যয়ী ও কঠোর পরিশ্রমী আজম এক বছর পূর্বে থেকে ওই গ্রামে মৎস্য খামারটি প্রতিষ্টা করে উপজেলা মৎস্য অফিসারের সুপরামর্শে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি অনুসরণ করে শুরু করেছেন কৃষিভিত্তিক সমন্বিত মৎস্য চাষ। তার মৎস্য খামারের পুকুরগুলোতে এখন চাষ হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। খামারের পূর্ব পার্শ্বের বিশাল একটি পুকুরে নাইলোটিকা মাছের চাষ করা হয়েছে। আর খামারের কার্যালয়ের দুই পার্শ্বের দুইটি বড় আকারের পুকুরে কার্প জাতীয় মাছ ও পাঙ্গাসসহ বিভিন্ন উন্নত জাতের মাছ চাষ করা হয়েছে। উপজেলা মৎস্য অফিসার বেনজির ইতিমধ্যেই আজমের প্রতিষ্টিত মৎস্য খামার পরিদর্শন করেছেন।

সরেজমিনে আজমের প্রতিষ্টিত মৎস্য খামার পরিদর্শন করে দেখা গেছে, উপজেলা সদর থেকে দেড়কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব পার্শ্বে মৎস্য খামারটির অবস্থান। ভৌগলিকভাবে এখানে উন্নতমানের মৎস্য চাষের জন্য খুবই উপযোগী। প্রায় ১০ কানি জমির উপর তিনটি পুকুর খনন করা হয়েছে। আর খননকৃত পুকুরগুলোতে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করা হচ্ছে। আর খামারটি প্রতিষ্টিত হওয়ায় এখানে বেশ কিছু সংখ্যক বেকারের কর্মস্থানও সৃষ্টি হয়েছে। অথচ মো: আজমগীর মৎস্য খামারটি প্রতিষ্টা না করলে বেকার লোকগুলোর কর্মস্থানের ব্যবস্থাও হতোনা। একজন সফল উদ্যোক্ত হিসেবে মৎস্য খামার প্রতিষ্টা করে ইতিমধ্যেই বেশ সুখ্যাতিও অর্জন করেছেন। তিনি বিজ্ঞান সম্মত কৃষি ভিত্তিক সমন্বিত মৎস্য চাষ পদ্ধতি অনুসরণ করে কার্যক্রম শুরু করায় সেটি এখন অনুকরণীয় দৃষ্টান্তে রূপান্তির হয়েছে। প্রতিনিয়তই তার মৎস্য পরিদর্শন করছেন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। তার প্রতিষ্ঠিত মৎস্য খামারটি এখন পুরো পেকুয়া উপজেলার মৎস্য খামার ও মালিকদের জন্য রোল মডেল।

রমিজ আহমদ মৎস্য ফার্মের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: আজমগীর জানান, তার আত্মপ্রত্যয়ী মনোভাবের কারণে ও বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ মৎস্য উৎপাদনে স্থানীয় ও জাতীয়ভাবে অবদান রাখার জন্য কার্যক্রম শুরু করেছেন। তার মৎস্য খামারে এখন উন্নত প্রজাতির মাছ চাষ হচ্ছে। তিনি লাখ লাখ টাকা পুঁজি বিনিয়োগ করেছেন। তিনি আরো জানান, মৎস্য খামারের পুকুর পাড়ে তিনি বিভিন্ন ফলজ চারার গাছও রোপন করার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। এছাড়াও ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা তিনি বলেছেন এ প্রতিবেদকের কাছে। তিনি বলেন‘ সরকারের মৎস্য অধিদপ্তর সহায়তা করলে এখানে সরকারীভাবে তিনি মৎস্য চাষের প্রদর্শনী খামারও প্রতিষ্টা করতে চান। ক্ষুদ্র পরিসরে তিনি একটি মৎস্য গবেষনা সেলও করার পরিকল্পনা করেছেন। তিনি এ জন্য সরকারের মৎস্য অধিদপ্তরের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ ও আলী হোছাইন জানান, হরিণাফাঁড়ী গ্রামের আজমের মৎস্য খামারটি এলাকায় নতুন করে আশার সঞ্চার সৃষ্টি করেছে। এ মহতি উদ্যোগের কারণে এলাকার মানুষজনও বেশ খুশি।

পেকুয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বেনজির আহমদ জানান, হরিণাফাঁড়ি গ্রামে আজমের প্রতিষ্টিত মৎস্য খামারে তিনি বেশ কয়েকবার সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। এটি নি:সন্দেহে একটি ভাল উদ্যোগ। তার মৎস্য খামারের কারণে লোকজনের কর্মস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি মাছ উৎপাদনেও অবদান রাখছেন।

পাঠকের মতামত: